পোস্টগুলি

জুলাই, ২০১৭ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

আমার আন্দালুস

ছবি
  আজ থেকে প্রায় এক হাজার বছর আগের কথা। স্পেন তখন ছিল আন্দালুস। মুসলিম স্পেন। চারিদিকে জ্ঞান বিজ্ঞানের জয়জয়কার। বড় বড় জ্ঞানী বিজ্ঞানী লেখক কবি ইতিহাসবেত্তা আলেম উলামার ছড়াছড়ি চারিদিকে। বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার বড় বড় দালান প্রাসাদ, উন্নত সড়ক, বিশাল কারখানা, কারুকার্যখচিত মাসজিদ সব মিলিয়ে সে যেন এক স্বর্গরাজ্য। আজকের যেমন লন্ডন প্যারিস, সেই সময়কার লন্ডন প্যারিস ছিল আন্দালুসের কর্ডোভা, গ্রানাডা, আল-হামরা, সেভিল আরো কত সমৃদ্ধ সব ঝলমলে নগরী। এটা শুধু স্পেনের কথা বলছি, মুসলমানদের অন্য ান্য সব সমৃদ্ধ নগরী বাগদাদ, দামেস্ক, কুফা, রাকা সেগুলোর কথা নাহয় আরেকদিন বলবো। আন্দালুসের নগরীগুলো এতো সমৃদ্ধ ছিল, ইসলাম এবং জ্ঞান বিজ্ঞানের এক অপূর্ব সমন্বয় ছিল। একটুও বাড়িয়ে বলছি না। ইতিহাসবেত্তা আল্লামা মুকরি তার বিশাল বড় এক গ্রন্থ নাফহুত তীব-এর একটা পুরো ভলিউম শুধু লিখেছেন কর্ডোভা নগরী নিয়ে, কর্ডোভার সৌন্দর্য নিয়ে। সবচেয়ে মজার বিষয় যেটা বলবো সেটা হচ্ছে তখনকার সময়ে বই ছিল আভিজাত্যের প্রতীক। প্রতিটি ঘরে ঘরে গ্রন্থাগার গড়ে তোলার সংস্কৃতি ছিল। যাদের বইয়ের দিকে ঝোঁক ছিল না সমাজে তাদে...

উসমানীয় পলিমেথ

ছবি
উসমানীয় সাম্রাজ্যে প্রথম ছাপখানার জনক ইব্রাহিম মুতেফেররিকা (১৬৭৪-১৭৪৫) যিনি ছিলেন একজন পলিমেথ। পলিমেথ মানে হচ্ছে বহুবিদ্যাবিশারদ। মধ্যযুগের ইসলামী স্বর্ণালী যুগে বেশির ভাগ বিজ্ঞানীই ছিলেন পলিমেথ। প্রায় সব বিজ্ঞানী, ইবনে সিনা, ওমর খৈয়াম, আল-বাত্তানি, আল-বিরুনি, আল-রাযী, ইবনে হাইসাম এরকম অনেকের নাম বলা যায়। পলিমেথের সংস্কৃতি মূলত মুসলিম বিজ্ঞানীদের দ্বারাই সূচীত হয়, এরপর তা ইউরোপে যায়। তবে আধুনিক যুগে পলিমেথ হচ্ছে হ্যালির ধূমকেতুর মতই বিরল, ৭৬ বছরের মধ্যে দেখা গেলেও যেতে পারে ক দাচিৎ। তাও সম্ভাবনা কম। কিন্তু ইসলামী স্বর্ণযুগের জ্ঞানী বিজ্ঞানী যত জনকে জানি প্রায় সকলেই ছিলেন পলিমেথ। এখনের যুগে পলিমেথ হওয়া অসম্ভবের কাছাকাছি কারণ জ্ঞান বিজ্ঞানের শাখা প্রশাখা এতো বেড়ে গিয়েছে আর প্রতিটি শাখা এতো বিস্তৃতি লাভ করেছে যে এক সাবজেক্ট নিয়েই সারাজীবন কেটে যায়। আমার বড্ড ইচ্ছে ছিল পলিমেথ হবো। কিন্তু ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার ব্যারিস্টার (আবার ডাক্তারি ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ভেতর হাজারটা শাখা প্রশাখা) একত্রে হওয়া সম্ভব কি? এই যুগে! নন-অ্যাকাডেমিকগুলোর কথা বাদ-ই দিলাম। হুম সম্ভব, যদি কেউ হাজার ব...

যে নারী সাহাবী যোদ্ধা ছিলেন

  অনেক নারী সাহাবীই যোদ্ধা ছিলেন, তবে উম্মে আমারা (রাঃ) ইতিহাসে একটা বিশেষ স্থান দখল করে আছেন। তাঁর প্রকৃত নাম নুসাইবাহ বিনতে কা'ব আল আনসারিয়াহ (রাঃ)। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক ব্যাপার, তিনি যখন উহুদ যুদ্ধে অংশ নেন তখন তাঁর বয়স ছিল ৪৩ বছর, উহুদ যুদ্ধে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিলেন, ১৩ টি স্থানে আঘাত লেগেছিল। আবার তিনি যখন ইয়ামামার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তখন তাঁর বয়স ছিল প্রায় ৫২ বছর। একজন মহিলা হয়েও তিনি সেই বয়সে যুদ্ধে অংশ নেন। উম্মে আমারা (রাঃ) এর ছেলে ছিলেন বিখ্যাত বীর সাহাবী হাবিব (রাঃ)। ভণ্ডনবী মুসায়লামা কাযযাব উম্মে আমারার ছেলে হাবিব (রাঃ)কে বন্দী করে একটি একটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বিচ্ছিন্ন করে কষ্ট দিয়ে হত্যা করে (মুসায়লামাকে নবী বলে স্বীকার করেন নি বলে)। মুসলিম বাহিনী যখন ভণ্ডনবী মুসায়লামার বিরুদ্ধে অভিযানের ঘোষণা দেয় তখন উম্মে আমারা পণ করেছিলেন ভণ্ডনবী মুসায়লামা কাযযাবকে যুদ্ধের ময়দানে নিজ হাতে মারবেন। ইয়ামামার যুদ্ধে তিনি এক হাতে বর্শা ও অন্য হতে তারবারি চালাতে চালাতে শত্রু বাহিনীর ব্যূহ ভেদ করে সামনে এগিয়ে যেতে থাকেন। এতে তাঁর দেহের এগারটি স্থান নিযা ও তরবারির আঘাতে আ...

যুদ্ধ ও ক্ষমতার সমীকরণঃ কে বেশি শক্তিশালী

ষোড়শ শতাব্দীর শুরুর দিকে পৃথিবীর তিনজন প্রতাপশালী রাজা/ বাদশাহ ছিলেন উসমানীয় সাম্রাজ্যের সুলতান প্রথম সলিম, সাফাভী ইরানের শাহ ইসমাঈল আর তৈমুরীয় বংশের তরুণ যোদ্ধা বাবর (তখনো মোঘল সাম্রাজ্যের জন্ম হয়নি।) সুলতান সলিম আর শাহ ইসমাঈল দুটো বিশাল সাম্রাজ্যের অধিপতি ছিলেন, তাদের প্রতাপশালী বলা ঠিক আছে কিন্তু বাবর তখন কিছুই ছিলেন না, একজন উথান পতনের মধ্যে দিয়ে সারভাইভ করে বাঁচা এক তরুণ বাদশাহ ছিলেন, অবশ্য পরবর্তীকালে সে বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে গিয়েছিলেন। তাদের তিনজনের মধ্যে একটি তুলনামূলক আলোচনা করবো। আলোচনায় অবশ্য সুলতান সুলেইমান, শাহ তাহমাস্প আর সায়বানি খানের আলোচনাও এসে যাবে। তিনজনের মৃত্যুর সময়কাল বলি, তাহলে বুঝতে সুবিধা হবে, সুলতান সলিম মারা যান ১৫২০ সালে, শাহ ইসমাঈল মারা যান ১৫২৪ সালে আর বাবর ১৫৩০ সালে। এর মানে ষোড়শ শতাব্দীর শুরুর দিকটায় তারা পৃথিবীতে বেশ দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। এবার দেখা যাক কে বেশি শক্তিশালী ছিলেন। বাবর যখন একেবারে কিশোর, হঠাৎ পিতার মৃত্যুতে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবেই ফরগানার রাজতখতে বসেন। সেই কিশোর বয়স থেকে আজীবন বাবর যুদ্ধ করে করে এমন এক সাম্রাজ্য গড়েছিলেন যার ন...

কবিতা সংগ্রাম-৩

আমরা সেই জাতি, সংগ্রাম করে বাঁচি, সত্যের পথে থাকি, এ পথে লড়ি, জীবন বিলিয়ে দেই, তাজা খুন বইয়ে তবু মোরা এ ঈমান বেচি না। যে পথে হেঁটেছে সব নবী ও রসূল, মুমিনেরা সে পথে মরতে আকুল, সাহাবী, শুহাদাদের পদরেখা দেখো, এখনো জ্বলজ্বল যেন করছে দেখো। সংগ্রামী পথে হাঁটে মুমিনেরা ভয়হীন, যে পথে গেছে সব সালফে সালেহীন। চারিদিকে শোনা যায় আমাদের তাকবীর, প্রভু ছাড়া কারো কাছে নোয়াই না এ শির। আমাদের পতাকায় লেখা দেখো কালেমা, গর্বিত আমরা, রাসূলের উম্মাত, আমরা চলি সেই কুরআনের পথে, আমাদের এ পথ চলেছে জান্নাত।

বই রিভিউঃ নসীম হিজাযীর শেষ প্রান্তর

ছবি
শেষ প্রান্তর, আমার পড়া সেরা ঐতিহাসিক উপন্যাসগুলোর একটি। নসিম হিজাযী গুণী সাহিত্যিক, এই বইটি দিয়েই তাকে চেনা, এরপর একে একে নসীম হিজাযীর অনুবাদ হওয়া সবগুলো উপন্যাস পড়ে ফেললাম। আর কত বার করে যে “শেষ প্রান্তর” পড়লাম, ইয়ত্তা নাই। তবু যেন স্বাদ মিটে না। মনে হয় আমিও সেখানের একজন, মঙ্গোলদের আক্রমণ প্রতিরোধের এক অপরাজিত সৈনিক। বলে রাখা ভালো ঐতিহাসিক উপন্যাস আর ইতিহাসকে এক করে ফেললে সমস্যা। ইতিহাস জানতে ইতিহাসের বই পড়তে হবে, ঐতিহাসিক উপন্যাস হোলো ঐতিহাসিক সত্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি সাজানো গল্প, সেখানে অনেক চরিত্রই কাল্পনিক হয়। তাই ঐতিহাসিক উপন্যাসকে ধ্রুব ইতিহাস বলে ভাবা যাবে না। এবার বইয়ের গল্পে আসি। বর্বর মঙ্গোলদের খাওয়ারেজমীয় সাম্রাজ্যে আক্রমণের কাহিনীর উপর ভিত্তি করে উপন্যাসটি রচিত। নসীম হিজাযী বড় দরদী ভাষায় তা ফুটিয়ে তুলেছেন। আমাদের অতীতের সমৃদ্ধ ইতিহাস পড়তে পড়তে মনে সূক্ষ্ম বেদনার সঞ্চার হবে। মঙ্গোলদের অপ্রতিরোধ্য আক্রমণের মুখে অধিকাংশই বাঁচতে পারেন নি। সাধারণ মানুষ, শিশু, মহিলা, বৃদ্ধ নির্বিশেষে হত্যা করা হয়েছে, তাদের কাঁটা মাথা সাজিয়ে উচু করা হতো, যে কমান...

প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ সামরিক পাইলট

ছবি
উসমানীয় পাইলট আহমেদ আলী এফেন্দি, পৃথিবীর প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ সামরিক পাইলট। উপরের ছবিটা ১৯১৬ সালের। আহমেদ আলীর জন্ম ১৮৮৩ সালে ইজমিরে। তার দাদি বুরনু (বর্তমান নাইজেরিয়া) থেকে উসমানীয় সাম্রাজ্যে দাস হিসেবে এসেছিলেন। নাবিক হওয়ার লক্ষ্যে ১৯০৪ সালে তিনি হাদিহান মেক্তেবি নামক নৌ কারিগরি বিদ্যালয়ে যোগ দেন। ১৯০৮ সালে তিনি ফার্স্ট লেফটেন্যান্ট হিসেবে উত্তীর্ণ হন। এরপর নেভাল ফ্লাইট স্কুলে (দেনিজ তায়ারে মেক্তেবি) উড্ডয়ন কোর্সে যোগ দেন। এরপর তিনি উসমানীয় বিমান বাহিনীর একজন সদস্য হন। আহমেদ আলি উড্ডয়ন ইতিহাসের প্রথম সামরিক পাইলট। ১৯১৬ সালের নভেম্বরে তিনি পাইলট হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯১৭ সালের ১৮ ডিসেম্বর ক্যাপ্টেন আহমেদ আলিকে উড্ডয়ন কোর্স সম্পূর্ণ করার জন্য বার্লিন পাঠানো হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে উসমানীয় খিলাফাতের পক্ষে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

মরুর বাঘ

ছবি
আফগানিস্তানের বাদশাহ আমানুল্লাহ খানের সাথে 'মরুভুমির বাঘ' এবং 'মদিনার প্রতিরক্ষক' নামে প্রসিদ্ধ ফাখরুদ্দীন পাশা।   আপনি কি জানেন কালিমার পতাকা গায়ে জড়ানো এই ফাখরুদ্দীন পাশা কে? খিলাফাতের শেষ গভর্নর, মাদিনাতুল মুনাওয়ারার। The Defender of Medina নামে প্রসিদ্ধ। রাসূলের প্রিয় মদিনাকে ভালোবাসার কারণে বিখ্যাত হয়ে আছেন। তিনি পরাজিত হয়ে ছিলেন তবু ব্রিটিশদের হাতে মদিনাকে ছেড়ে দেন নি, আত্মসমর্পণ করেন নি। এই বিষয়ে আবু আব্দুল্লাহ ভাই একটা নোট লিখেছিলেন, "মাদীনার শেষ সিপাহসালার" নামে। বিস্তারিত জানতে পড়ে দেখতে পারেনঃ https://www.facebook.com/notes/abu-abdullah/%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%80%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B7-%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%B0/581200195373016/ আর ফাখরুদ্দিন পাশার সাথে দাঁড়ানো আফগানিস্তানের রাজা আমানুল্লাহ খান। তিনি এমন কেউ ছিলেন না ইতিহাস তাকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। বরং তার সাত পুরুষের কপাল ফাখরুদ্দিন পাশার সাক্ষাৎ পেয়েছিলেন, তার সাথে দাঁ...

করাচি থেকে ইস্তাম্বুল বা মুসলিম ভ্রাতৃত্ব

ছবি
এই আলোকচিত্রটির পেছনে একটি সুন্দর পটভূমি রয়েছে। ১৮৯৭ সালে অটোমান-গ্রীক যুদ্ধে উসমানীয় সৈন্যবাহিনী বিজয় লাভ করলে শুভেচ্ছা জানাতে করাচি থেকে সম্ভ্রান্ত মুসলিম প্রতিনিধিরা ইস্তাম্বুলে আসেন। এটি তাদের ছবি। ১৮৯৭ সালে উসমানীয় খিলাফাতের সাথে কিংডম অব গ্রিসের মধ্যে সংগঠিত যুদ্ধটি 'গ্রেসো-টার্কিস ওয়ার' নামে পরিচিত। উসমানীয়দের শেষ যুগের খলীফাদের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ সুলতান দ্বিতীয় আব্দুল হামিদের শাসনামলে এ যুদ্ধ সংগঠিত হয়। উসমানীয় পক্ষের কমান্ডারদের মধ্যে এজেম পাশা, আহমেদ হিফযি পাশা ও হাসান তাহসিন পাশা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। আর নৌ-যুদ্ধের অ্যাডমিরাল ছিলেন হাসান রামি পাশা (ন্যাভাল মিনিস্টার)। এই যুদ্ধে উসমানীয়দের সামরিক বিজয় ঘটলেও পরবর্তীতে কনস্টান্টিনোপল চুক্তির কারণে ইউরোপের সম্মিলিত শক্তির হস্তক্ষেপে (great powers of Europe) গ্রিস কূটনৈতিক বিজয় লাভ করে, ফলে উসমানীয় আয়ত্তাধীন ক্রিট উপদ্বীপ স্বায়ত্তশাসন পায়।

উসমানীয় খিলাফাতের পতন হোলো যেভাবে (সংক্ষিপ্ত)

ছবি
শেষ উসমানীয় খলীফা দ্বিতীয় আব্দুল মাজিদ দ্বিতীয় আব্দুল মাজিদ ১৯২২ থেকে ১৯২৪ পর্যন্ত খলীফা হিসেবে অধিষ্ঠিত ছিলেন, আসলে তখন খলীফা পদটি প্রতীকী ধর্মী ছিল, আব্দুল মাজিদের হাতে কোনো ক্ষমতা ছিল না। তিনি শুধুই খলীফা ছিলেন, সুলতান ছিলেন না। সুলতান পদটি ১৯২২ সালে বিলুপ্ত করে দেয়া হয়, তখন সব ক্ষমতা গ্র্যান্ড ন্যাশনাল এসেম্বলির হাতে ছিল। ১৯২৪ সালে খলীফা পদটিও বিলুপ্ত করে দেয়া হয়। এরপর শুরু হয় জালিম আতাতুর্কের শাসন, ইসলামে র নাম নিশানা মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়। শেষ স্বাধীন উসমানীয় সুলতান ছিলেন দ্বিতীয় আব্দুল হামিদ। ১৯০৯ সালে ইউরোপ-প্রভাবিত কমিটি অব ইউনিয়ন অ্যান্ড প্রগ্রেস ক্ষমতা দখল করে নিলে তাকে পদচ্যুত করে পঞ্চম মুহাম্মদকে বসানো হয়। তখন থেকে পাশারা দেশ চালাতো। কিন্তু পঞ্চম মুহাম্মদ কমিটির প্রভাব মুক্ত হয়ে নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালান। এক হিসেবে তিনিও স্বাধীন ছিলেন, তিনি জাতীয় পরিষদ ভেঙ্গে দেন, কমিটি অব ইউনিয়ন অ্যান্ড প্রগ্রেস সরকারের পতন ঘটান। কিন্তু দুঃখজনক তিনি ১৯১৮ সালে মারা যান। এরপর ষষ্ঠ মুহাম্মদ মসনদে বসেন, ১৯১৮ থেকে ২২ পর্যন্ত তিনি সুলতান ছিলেন, এ সময়টা য...

গল্প-১

এক মধ্যরাতে গ্র্যান্ডপা (দাদু) আমায় ডেকে পাঠালেন। তখন তার অবস্থা সঙ্গিন। মাঝেমধ্যেই জ্ঞান হারান। বার বার বলছিলেন, আমার সময় বেশি নাই, আমার সময় বেশি নাই। আমি তার সামনে গেলে তার অস্থিরতা যেন উবে গেলো। তিনি ঘরের সকলকে বেরিয়ে যেতে বললেন। গম্ভীর হয়ে আমাকে বললেন, দাদুভাই বোসো। আমি দাদুর বিছানায় বসলাম। তিনি শুয়ে ছিলেন। আমার হাত ধরে বললেন, দাদুভাই, আমি মৃত্যুর খুব কাছাকাছি। তোমাকে একটা দায়িত্ব দিয়ে যেতে চাই। আমি হয়ে বললাম, কি দায়িত্ব বলুন। দাদু বললেন, শান্ত হও বাছা। এই দায়িত্ব এমন কিছু যা কাঁধে নিলে কাধ ভেঙ্গে পড়তে পারে, এই দায়িত্ব পালনের জন্য লাগবে মজবুত কাঁধ। আমি আগা মাথা কিছুই বুঝে উঠতে পারলাম না। তিনি তখন বললেন, ভালো আর খারাপের দ্বন্দ চিরন্তন। যেদিকে মুসা থাকবে এর উল্টো দিকে থাকবে ফেরাউন, যেদিকে মুহাম্মদ থাকবে এর বিপরীত দিকে থাকবে আবু জেহেলরা। আমি মাথা নাড়লাম। তিনি বললেন, এইযে ভালো আর খারাপের দ্বন্দ, ইসলাম এবং জাহেলিয়াতের দ্বন্দ, এর মধ্য থেকে যে কোনো এক পক্ষ বেছে নিতে হবে, মাঝখানের কোনো অবস্থান নাই। তিনি এইটুকু বলে খুব হাঁপাচ্ছিলেন। আমি বললাম, বাকিটা পরে শুনবো, আপনি বিশ্রা...

ইসলাম কি?

ছবি
ইসলাম এমন একটি দ্বীন, এমন একটি জীবন ব্যবস্থা যার তুলনা অন্য কোনো মতবাদ, দর্শন বা ধর্মে খুঁজে পাওয়া যাবে না। ইসলামী জীবন ব্যবস্থার মতন অন্য কোনো জীবনদর্শন মানুষের প্রতিটি সমস্যার এতো যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত সমাধান দিতে সক্ষম নয়। কারণ ইসলাম কোনো মানুষের তৈরি জীবন ব্যবস্থা নয়, ইসলাম হচ্ছে মহান স্রষ্টার দেয়া জীবন বিধান। মহান রব্বুল আলামিন যুগে যুগে নবী রসূল প্রেরণ করেছেন। এরুপ ভাবে শেষ নবী হিসেবে আমাদের জন্য প্রেরণ করেছেন মহামানব মুহাম্মদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে। আর মহান আল্লাহর বাণী পবিত্র কুরআন নাযিল করেন নবী মুহাম্মদের ওপর। এই কুরআন এবং নবী মুহাম্মদ হচ্ছে আমাদের জন্য বিশেষ উপহার, মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে। আল্লাহর প্রতি ঈমান আনয়নকারী প্রত্যেককে নবী মুহাম্মদকে অনুসরণ করা এবং কুরআনকে আল্লাহর কিতাব হিসেবে মেনে নিতে হবে, সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর প্রতি ঈমান আনতে হবে, আর এটাই হচ্ছে ইসলাম। এই দ্বীন ইসলামকে যারা গ্রহণ করে নিবে তারাই হচ্ছে মুসলিম । ইসলাম একটি দ্বীন, একটি জীবন ব্যবস্থা। এটি শুধু ব্যক্তিগতভাবে পালনের জন্য আসে নি। বরং সামাজিক ভাবে, রাষ্ট্রীয় ভাবে ইসলামকে গ্রহণ করতে হবে। ...

স্বীকারোক্তি

ছবি
কলম তুলে নিলাম হাতে আর প্রতিজ্ঞা করলাম, এই কলমের খোঁচায় খোঁচায় মারবো শয়তান, কলমের আঁচড়ে আঁচড়ে ছিন্ন ভিন্ন করবো শয়তানের রাজত্ব, আবার এই কলমের টানেই রচনা করবো আমাদের ভবিষ্যতের মানচিত্র।  ১৭ জুলাই, ২০১৭। ঢাকা, বাংলাদেশ।